পাকিস্তানে চার্চে হামলায় গ্রেফতার শতাধিক

টিবিএন ডেস্ক

আগস্ট ১৭ ২০২৩, ১১:১৭

পাকিস্তানের চার্চে হামলায় গ্রেফতার শতাধিক। ছবি:সংগৃহীত

পাকিস্তানের চার্চে হামলায় গ্রেফতার শতাধিক। ছবি:সংগৃহীত

  • 0

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের জারানওয়ালায় খ্রিষ্টান অধ্যুষিত অঞ্চলে দুটি চার্চে হামলার ঘটনায় ১০০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

দুই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীর বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ওই শহরের দুটি চার্চ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি ঘরে বুধবার হামলা চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় হাজারো মুসলমান।

ঘটনার একদিন পর বৃহস্পতিবারেও দেশের ঐতিহাসিক স্যালভেশন আর্মি চার্চে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

ওই শহরে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ছেঁড়া পৃষ্ঠা পাওয়ার পর শহরের মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ধর্মীয় নেতার কাছে ওই পৃষ্ঠা নিয়ে গেলে তিনি অনুসারীদের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের আহ্বান জানান।

একটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হামলাকারীদের বেশিরভাগই তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) নামে একটি ইসলামি রাজনৈতিক দলের সদস্য ও অনুসারী।

তবে টিএলপি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

জারানওায়ালায় উত্তেজনা চলমান থাকায় স্যালভেশন আর্মি চার্চ ও সেইন্ট পল ক্যাথোলিক চার্চ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।

পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী আমীর মীর ধরম অবমাননার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইতোমধ্যে জারানওায়ালার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য সেনা মোতায়ন করা হয়েছে। তারা এলাকাটি ঘিরে রেখেছে।

পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকার সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে জারানওায়ালাসহ ফায়সালাবাদে আগামী সাত দিনের জন্য যেকোনো জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

হামলাকারীদের দাবি, কোরআন অবমাননায় জড়িতদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।

কর্তৃপক্ষ জানিয়ছে, ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ব্লাসফেমি আইনের অধীনে অভিযোগ আনা হয়েছে।

এলাকার খ্রিষ্টান বাসিন্দারা পালটা অভিযোগ তুলে বলছেন, হামলাকারীরা তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। তাদের পবিত্র গ্রন্থ বাইবেল ছিঁড়ে ফেলেছে ও পুড়িয়ে দিয়েছে।

প্রতিবেশী শহর লাহোরের পাকিস্তানি বিশপ আজাদ মার্শাল বলেছেন, এ ঘটনায় খ্রিষ্টান কমিউনিটি ‘গভীরভাবে ব্যথিত ও মর্মাহত’।

তিনি এক এক্স বার্তায় বলেন, ‘আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হামলার ন্যায়বিচার চাই। আমাদের সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের আপনারা আশ্বস্ত করুন, নিজ দেশে আমাদের জীবন নিরাপদ ও মূল্যবান।’

পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তবে এখনও দেশটিতে এই আইনের অধীনে কাউকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়নি।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন