চলতি জুলাই মাস একশ হাজার বছরের উষ্ণতম

টিবিএন ডেস্ক

জুলাই ২৭ ২০২৩, ২১:০৬

গরমে ইউরোপ ও অ্যামেরিকার জনজীবনে তৈরি হয়েছে দুর্ভোগ। ছবি: সংগৃহীত

গরমে ইউরোপ ও অ্যামেরিকার জনজীবনে তৈরি হয়েছে দুর্ভোগ। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, জুলাই মাসে তাপ এতটাই চরম আকার ধারণ করেছে যে এ মাসের তাপমাত্রা ‘নিশ্চিত ভাবে’ অন্য যেকোন মাসের রেকর্ড উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে ভাঙবে।

তিন মহাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্রচণ্ড তাপমাত্রায় শুকিয়ে যাচ্ছে ও সাগরের তাপমাত্রায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন এসেছে। এমন সময় দুটি বৈশ্বিক জলবায়ু কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞানীরা জুলাই শেষ হওয়ার আগেই জানিয়েছেন এই মাসটি এখন পর্যন্ত রেকর্ডে পৃথিবীর উষ্ণতম মাস হতে চলেছে।

জুলাইয়ের প্রথম ২৩ দিনের গড় তাপমাত্রা ছিল ১৬.৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬২.৫১ ফারেনহাইট), যা ২০১৯ সালের জুলাইয়ের ১৬.৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬১.৯৩ ফারেনহাইট) রেকর্ডের চেয়ে অনেক বেশি।

তবে কোপারনিকাসের বিজ্ঞানীসহ অনেক বিশেষজ্ঞের দাবি, গাছের গুড়ি, প্রবাল প্রাচীর ও গভীর সমুদ্রের পলিমাটির স্তর থেকে প্রাপ্ত হাজার বছরের জলবায়ুর তথ্য থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় এই মাসের তাপমাত্রা ১২০,০০০ বছরের মধ্যে গ্রহের সবচেয়ে উষ্ণতম তাপমাত্রা।

কোপারনিকাসের উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস বলেন, ‘এটি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম তাপমাত্রা।’

এবার উত্তর গোলার্ধে উষ্ণতম গ্রীষ্ম এসেছে। কোপারনিকাসের পরিচালক কার্লো বুওনটেম্পো বলেন, ‘সকল প্রতিকূলতা রেকর্ড ভাঙ্গা গ্রীষ্মের পক্ষে রয়েছে।’

গরমে মানুষের তীব্র ভোগান্তিতে রয়েছে মানুষ। অ্যামেরিকার কিছু অংশে তাপমাত্রা ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে যাওয়ায় গরমে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গেছে।

ভূমধ্যসাগরে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে দাবানলে এখন পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এশিয়ায় তীব্র তাপপ্রবাহ প্রাণহানি ঘটাচ্ছে। এর সঙ্গে খরায় খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

বার্গেস বলেন, ‘মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন এই ভয়ঙ্কর তাপ প্রবাহের মূল কারণ। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্বের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।’

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই গ্রীষ্মে অ্যামেরিকা, চায়না ও দক্ষিণ ইউরোপে জলবায়ু পরিবর্তন তাপপ্রবাহের উপর ‘অপ্রতিরোধ্য’ ভূমিকা পালন করেছে।

বার্গেস বলেন, এল নিনোর আগমন প্রাকৃতিক জলবায়ুর ওঠানামা এবং তাপমাত্রার উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি কারণ এটি এখনও বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে। সম্ভবত এল নিনো আগামী বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে আরও বড় ভূমিকা পালন করবে।

জুলাই মাসে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম দিনটি রেকর্ড করা হয়। কোপার্নিকাসের তথ্য অনুযায়ী, ৬ জুলাই বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা বেড়ে ১৭.০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬২.৭৪ ফারেনহাইট) হয়েছে, যা ২০১৬ সালের আগস্টের ১৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬২.২৪ ফারেনহাইট) তাপমাত্রার রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

যদি এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রবণতা শরৎ এবং শীতকালে অব্যাহত থাকে তবে ২০২৩ সালটি রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণতম বছরগুলির মধ্যে একটি হতে পারে।