ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গোপন সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অ্যামেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত খুশি নয়, এই বার্তা ওয়াশিংটনকেও পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
ওয়াশিংটনের মতো ভারতও ঢাকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় বলে সূত্র জানিয়েছে।
ভারতের নয়াদিল্লিতে আর তিন সপ্তাহ পর অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-টোয়েন্টি নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এর আগে ভারতের বাংলাদেশ বিষয়ক বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, সাউথ ব্লক (ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অবস্থান) মনে করে, বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী দলকে 'রাজনৈতিক ছাড়' দেয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে। যেটুকু উদার পরিবেশ রয়েছে, সেটি আর থাকবে না। নয়াদিল্লি মনে করে বাংলাদেশে হাসিনার সরকার দুর্বল হলে তা ভারত বা অ্যামেরিকার জন্য ভালো হবে না।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, নয়াদিল্লি একাধিক স্তরের বৈঠকে বাইডেন প্রশাসনকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘতম স্থল সীমান্ত রয়েছে। ফলে সে দেশের যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতেও প্রভাব ফেলে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হলে ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে বলে নয়াদিল্লি বাইডেন প্রশাসনকে জানিয়েছে।
সূত্রমতে, অ্যামেরিকা জামায়াতকে বরাবরই একটি রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তুলনা করে। বাস্তবে জামায়াত উগ্র মৌলবাদী সংগঠন।
বাংলাদেশের জন্য বাইডেন প্রশাসনের জারি করা ভিসার বিধিনিষেধকে নয়াদিল্লি মোটেও ন্যায়সঙ্গত মনে করে না। নতুন এই ভিসা নীতির ফলে যারা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করবেন, তারা অ্যামেরিকার ভিসা পাবেন না।
ভারতের কূটনৈতিক শিবির মনে করে, আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজ দেশের আইন প্রয়োগ করে সে দেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতি জারি করেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি সফর করেছে। তারা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপজ্জনক বলেও বার্তা দিয়েছেন তারা।
প্রতিনিধিদলের প্রধান কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেন, ‘আমরা ভারতকে বলেছি, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা উভয় রাষ্ট্রের জন্যই জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে বাংলাদেশের মাটিকে ভারতবিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।’