মিকেল আর্তেতার দল এখন ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে আছে। কিন্তু বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হাতে এক ম্যাচ বেশী আছে। এ মাসের শেষে এমিরেটস স্টেডিয়ামে গানার্সরা ম্যানচেস্টার সিটিকে আতিথ্য দিবে।

গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি ও গ্যাব্রিয়েল জেসুসের প্রথমার্ধের দুই গোলে আর্সেনাল টানা অষ্টম জয়ের পথে ভালভাবেই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মোহাম্মদ সালাহ ৪২ মিনিটে গোল করে লিভারপুলকে লড়াইয়ে ফেরার ইঙ্গিত দেন।

৫৪ মিনিটে সালাহ পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে রবার্তো ফিরমিনোর গোলে লিভারপুল সমতায় ফিরে। জার্গেন ক্লপের দল এরপর বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি।

গোলরক্ষক এ্যারন রামসডেলের দক্ষতায় আর্সেনাল এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ম্যাচ শেষে আর্তেতা বলেন, 'আমরা ম্যাচটি নিজেদের ভুলেই নষ্ট করেছি। আজ সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো প্রথমার্ধে যা খেলেছি তার কিছুই শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারিনি। আমরা ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। আমরা প্রতিটি বলে তাদের খেলার সুযোগ করে দিয়েছি। লিভারপুলের মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দলের বিপক্ষে এভাবে খেললে কোনোভাবেই জেতা সম্ভব নয়।’

ম্যাচের বিরতির সময় বিতর্কিত এক ঘটনায় উত্তাপ ছড়ায় অ্যানফিল্ডে। লিভারপুলের স্কটিশ ফুটবলার অ্যান্ডি রবার্টসন অভিযোগ করেন ম্যাচের লাইনসম্যান কন্সট্যানটিন হাজিডাকিস তাকে কনুই দিয়ে গুঁতো দিয়েছেন। অভিযোগটি প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখবে বলে জানিয়েছে।

ড্র করে ২০১২ সালের পর থেকে লিভারপুলের বিরুদ্ধে এ্যাওয়ে ম্যাচে জয়বিহীন থাকল আর্সেনাল।

ম্যাচের ৮ মিনিটে বুকায়ো সাকা লিভারপুলের রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে মার্টিনেলিকে বল এগিয়ে দেন। অ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করতে কোনো ভুল করেননি মার্টিনেলি। ভার্জিল ফন ডাইক বাজে ফর্মের কারণে এবারের মৌসুমে লিভারপুলকে অনেক ম্যাচেই হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। কালও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ডাচ এই সেন্টার-ব্যাকের ভুলে ২৮ মিনিটে মার্টিনেলির ক্রসে জেসুস ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বিরতির ৩ মিনিট আগে সালাহের গোলে লিভারপুল তাদের স্বরূপে ফিরে।

এই গোলের পরেই দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলের চেহারা পাল্টে যায়।

৫৪ মিনিটে দিয়োগো জোতাকে ফাউলের অপরাধে রব হোল্ডিংয়ের বিরুদ্ধে পেনাল্টি আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা। কিন্তু সালাহ স্পট কিক থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। এর পরের মিনিটেই সালাহ ভুল শোধরানোর সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু তার শট দরুন দক্ষতায় রুখে দেন রামসডেল। এরপর ম্যাচ শেষের ৯ মিনিট আগে বদলী খেলোয়াড় ডারউইন নুনেজের শট আটকে দিয়ে আর্সেনালকে রক্ষা করেছিলেন ইংল্যান্ডের এই গোলরক্ষক। তবে শেষ পর্যন্ত আর ফিরমিনোকে আটকাতে পারেননি। ট্রেন্ট আলেক্সান্দার আর্নল্ডের ক্রস থেকে দারুণ এক ফিনিশিংয়ে ফিরমিনো লিভারপুলকে সমতায় ফেরান। মিশরীয় তারকা সালাহর শট রুখে দিয়ে রামসডেল ম্যাচের সবচেয়ে দুর্দান্ত সেভটি করেছেন।

ক্লপ বলেছেন, ‘আমরা দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে এসেছি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ছেড়ে দেইনি। লড়াই করতে আমরা প্রস্তুত আছি। এভাবেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। সামনে যে সুযোগগুলো আসবে সেগুলো কাজে লাগাতে চাই।’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে গত মাসে ৭-০ গোলে হারানোর পর ৫ ম্যাচে জয়বিহীন আছে লিভারপুল। শীর্ষ চারের পজিশন থেকে ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে এখনও অষ্টম স্থানেই রয়ে গেছে দলটি।