তবে বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে বিদ্রোহ অবসানের সিদ্ধান্ত নেয় ভাগনার।
রেস্তোরাঁ ও ক্যাটারিং ম্যাগনেট ইয়েভগিনি প্রিগোযিন প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি ভাগনারের প্রতিষ্ঠাতা। তার গ্রুপের সদস্যরা নিয়মিত রাশিয়ান সেনাদের সঙ্গে মিলে ইউক্রেইনের বাখমুতে হামলা চালিয়েছে।
তবে রাশিয়ার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের কট্টর সমালোচক প্রিগোযিন। ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান ভুলভাবে পরিচালনার জন্য দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং চিফ অফ দ্য জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে দায়ী করেন তিনি।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক এক চুক্তি সই করতেও অস্বীকৃতি জানায় ভাগনার।
ভাগনারের ফিল্ড ক্যাম্পে শনিবার হামলার জন্য রাশিয়ান সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেন প্রিগোযিন। রাশিয়ার ডিফেন্ড মিনিস্ট্রি (এমওডি) অবশ্য তার দাবিকে ‘উস্কানি’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। তবু প্রিগোযিন তার বাহিনী নিয়ে বিচারের জন্য মস্কোর পথে রওনা হয়।
ট্যাংকসহ সাঁজোয়া ভাগনার কনভয় শনিবার ভোরবেলা দক্ষিণের শহর রোস্তভ-অন-ডনে প্রবেশ করে। ভাগনার সদস্যরা কোনো লড়াই ছাড়াই দক্ষিণ সামরিক জেলার সদর দফতর নিয়ন্ত্রণে নেয়। রোস্তভ-এ বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ভাগনারের বিদ্রোহের কঠোর নিন্দা করেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কোম্পানিটি বিদ্রোহ ঘোষণার পর পরই সশস্ত্র বিদ্রোহ উসকে দেয়ার অভিযোগে প্রিগোযিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস।
এক ভিডিও ভাষণে শনিবার সকালে পুতিন বলেন, ‘ভাগনারের কার্যক্রম রাষ্ট্রদ্রোহের সমান। তারা আমাদের দেশ ও জনগণের পিঠে ছুরিকাঘাত করেছে।’
ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে পুতিন বলেন, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
মস্কো ও এর আশেপাশের অঞ্চলে সন্ত্রাসবিরোধী বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। বেশ কয়েকটি শহরে সব ধরনের পাবলিক ইভেন্ট বাতিল করা হয়। মস্কোর দিকে যাওয়া প্রধান মহাসড়কগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।
পুতিনের পক্ষে প্রিগোযিনের সঙ্গে কথা বলেন বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। প্রিগোযিনকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হলে কিছু সময় পরে রোস্তভ-অন-ডন ছাড়েন ভাগনার বিদ্রোহীরা।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, রক্তপাত এড়াতে প্রিগোযিনের বিরুদ্ধে আনা সব মামলা প্রত্যাহার করা হবে। তিনি বেলারুশ চলে যাবেন। এদিকে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধে অবদান রাখা ভাগনার সদস্যদের কোনো ধরনের আইনি বিচারের মুখোমুখি করা হবে না।