ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা অ্যামেরিকার

টিবিএন ডেস্ক

এপ্রিল ১৮ ২০২৪, ১৪:৪০

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত

  • 0

ইযরায়েলের ওপর গত সপ্তাহে নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচি এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল বাইডেন প্রশাসন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যারা ইরানের হামলাকে সমর্থন করে তাদের সবার কাছে এটা পরিষ্কার হোক যে অ্যামেরিকা ইযরায়েলের নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এই অঞ্চলে আমাদের কর্মী এবং অংশীদারদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা আপনাকে [ইরান] জবাবদিহি করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করব না।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘ইযরায়েলে আক্রমণের পর সকালে আমি সহকর্মী জি-সেভেন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা ইরানের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

‘আমাদের মিত্র ও অংশীদাররা ইরানের অস্থিতিশীল সামরিক কর্মসূচি সীমিত করার জন্য অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যবস্থা জারি করেছে বা করবে।’

প্রশাসন ইতোমধ্যেই ইরানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৬০০টিরও বেশি ব্যক্তি ও সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

ইরানের ইউএভি ক্ষেপণাস্ত্র উত্পাদন, পরীক্ষা এবং সেইসঙ্গে আইআরজিসির পক্ষে কাজ করে এমন ১৬ ব্যক্তি এবং দুটি ব্যবস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানায় ইউএস ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আরও জানায়, ইরানের খুজেস্তান স্টিল কোম্পানিসহ (কেএসসি) এমন পাঁচটি কোম্পানিকেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে যারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় ইস্পাত উৎপাদন সামগ্রী সরবরাহ করে বা ক্রয় করে।

নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে স্টেইট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, এটি ইরানের অটোমেকার বাহমান গ্রুপ এবং এর তিনটি সহযোগী সংস্থাকেও নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যারা আইআরজিসি এবং অন্য সদ্য নিষিদ্ধ ব্যবস্থাকে বস্তুগতভাবে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।

ইউএস কমার্স ডিপার্টমেন্ট একই সঙ্গে প্রযুক্তি খাতে ইরানের প্রবেশাধিকার সীমিত করতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে বলে জানায় স্টেইট।

ট্রেজারি বিভাগ আরও জানায়, বৃটেইনও একযোগে ইরানের ইউএভি এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকটি সামরিক সংস্থা, ব্যক্তি এবং সংস্থাকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।

এর আগে, ইইউ-ও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হয়।

ইযরায়েলে ইরানের সরাসরি হামলার পর বুধবার ব্রাসেলসে ইইউয়ের ২৭ নেতার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে ছোড়া ৩০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার বিষয় উঠে আসে।

হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন বেশিরভাগই ইযরায়েল ও তার মিত্রদের দ্বারা ভূপাতিত হয়েছিল বলেও বৈঠকে উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে সম্মত হন ইইউ নেতারা।

গত শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো সরাসরি ইযরায়েলে হামলা চালায় ইরান। ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইযরায়েলের বিমান হামলায় কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা নিহতের বদলা হিসেবে ওই হামলা চালানো হয়।

বড় ধরনের এই হামলায় তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরান। এগুলোর বেশির ভাগই আকাশে ধ্বংস করার দাবি করেছে ইযরায়েল।

এই হামলা রুখতে ইযরায়েলকে সহায়তা করে অ্যামেরিকা, ইউকে, ফ্রান্স ও জর্ডান।


0 মন্তব্য

মন্তব্য করুন